1. dailyjonotarkontho01@gmail.com : দৈনিক জনতার কন্ঠ : দৈনিক জনতার কন্ঠ
  2. dailyjonotarkonthonewseditor@gmail.com : Mr Masud Rana : Mr Masud Rana
  3. live@www.dailyjonotarkontho.com : দৈনিক জনতার কন্ঠ : দৈনিক জনতার কন্ঠ
  4. info@www.dailyjonotarkontho.com : দৈনিক জনতার কন্ঠ :
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:১০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ :
মহিমাগঞ্জে তাফসীরুল কুরআন ও ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত, প্রধান অতিথি শামীম কায়সার লিংকন মহান বিজয় দিবস আজ: রক্তস্নাত সংগ্রামের গৌরবময় ১৬ই ডিসেম্ব।র কাশিমপুরে নারী শ্রমিকের মোবাইল ছিনতাই ও ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ কুমারগাড়ীতে তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে মোহাম্মদ শামীম কায়সার লিংকনের বক্তব্য বেউরগ্রামে ইসলামী জলসায় মোহাম্মদ শামীম কায়সার লিংকনের বক্তব্য চিয়ারগাঁওয়ে জামে মসজিদ উন্নয়ন উপলক্ষে ওয়াজ মাহফিল ও তিনতলা মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন। শিবপুর–মালঞ্চা পুরাতন জামে মসজিদের উন্নয়নে ইসলামী জলসায় প্রধান অতিথি শামীম কায়সার লিংকন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত নওগাঁ ইউনাইটেড প্রেস ক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন কালিয়াকৈরে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে ধানের শীষের প্রার্থী শামীম কায়সার লিংকন
আমাদের Facebook পেজ

সত্যের কণ্ঠ রক্তে রঙিন: গাজায় চার সাংবাদিক নিহত

জনতার কন্ঠ ডেস্কঃ-
  • প্রকাশিত: সোমবার, ১১ অগাস্ট, ২০২৫
  • ১২৬ বার পড়া হয়েছে

 

জনতার কন্ঠ ডেস্কঃ-

গাজার আকাশে কালো ধোঁয়া ভাসছে, বিস্ফোরণের প্রতিধ্বনি মিলিয়ে যাচ্ছে কান্নার স্রোতে। গতকাল (১০ আগষ্ট) দুপুরে সেই কান্নার সঙ্গে মিশে গেছে সংবাদপেশার মানুষের শোক। গাজার আল-শিফা হাসপাতালের প্রধান ফটকের কাছে সাংবাদিকদের জন্য স্থাপিত একটি তাঁবুতে অবস্থানকালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন আল-জাজিরার চার সাংবাদিক—আনাস আল শরিফ, মোহাম্মদ কুরেইকেহ, ইব্রাহিম জাহের এবং মোহাম্মদ নুফাল। তাঁরা কোনো যুদ্ধরত পক্ষ ছিলেন না, তাঁরা ছিলেন কেবল সত্যের দূত—তবুও তাঁদের জীবন থেমে গেছে এক মুহূর্তে।

আমি নিজেও একজন সাংবাদিক। চারজন সাংবাদিকের এই মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর পড়ার পর আমার বুকের ভেতর হাহাকার জমে আছে। মনে হচ্ছে, যেন আমার নিজের পরিবার থেকে চারজনকে হারালাম। আমরা সাংবাদিকরা যুদ্ধক্ষেত্রে যাই যুদ্ধ করার জন্য নয়, বরং যুদ্ধ থামানোর জন্য। আমাদের অস্ত্র বুলেট নয়—আমাদের অস্ত্র তথ্য, সত্য আর মানুষের কণ্ঠস্বর। কিন্তু সেই কণ্ঠস্বরও আজ নিভে গেল ইসরায়েলি বিমান হামলার ধ্বংসস্তূপের নিচে।

আনাস আল শরিফ—মাত্র ২৮ বছর বয়সী, তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আর সাহসী লেখনির জন্য পরিচিত। গত বছর রয়টার্সের সঙ্গে যৌথভাবে পুলিত্জার পুরস্কার জয় করেছিলেন। মোহাম্মদ কুরেইকেহ, ইব্রাহিম জাহের, মোহাম্মদ নুফাল—প্রত্যেকেই ছিলেন মানুষের গল্পকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার অদম্য যোদ্ধা। সেই তাঁবুতে বসে হয়তো তাঁরা ছবি তুলছিলেন, নোট নিচ্ছিলেন, বা লাইভ রিপোর্ট দিচ্ছিলেন—হঠাৎই এক বিকট শব্দে সবকিছু থেমে গেল।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামলার দায় স্বীকার করেছে, দাবি করেছে আনাস আল শরিফ ছিলেন ‘হামাস সেলের প্রধান’। কিন্তু বাকিদের বিষয়ে কোনো প্রমাণ দেয়নি। আল-জাজিরা এই হামলাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড আখ্যা দিয়ে বলেছে, “এটি সত্যকে স্তব্ধ করার চেষ্টা। সাংবাদিকদের হত্যা করে যুদ্ধাপরাধ লুকানো যাবে না।”

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছেন, “যুদ্ধক্ষেত্রে সাংবাদিকরা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের আওতায় সুরক্ষিত। এই হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া জরুরি।”

কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (CPJ) জানিয়েছে, ২০২৫ সালের শুরু থেকে আগস্ট পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৭২ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন—যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোনো সংঘাতে সাংবাদিক মৃত্যুর সবচেয়ে ভয়াবহ হার।

আমাদের মনে রাখতে হবে, সাংবাদিকরা যুদ্ধক্ষেত্রে বন্দুক হাতে নিয়ে যায় না, বরং তারা যায় কলম, ক্যামেরা, মাইক্রোফোন হাতে। তাঁদের কাজ হলো নীরবদের কণ্ঠস্বর সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া, মিথ্যার ভিড়ে সত্যের বাতি জ্বালিয়ে রাখা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাগুলো বলছে—সাংবাদিকরা ইচ্ছাকৃতভাবে টার্গেট হচ্ছেন। কারণ, যারা যুদ্ধ করে, তারা চায় না তাদের অপরাধের প্রমাণ কেউ রাখুক, চায় না কোনো লেন্স রক্তে রঙিন বাস্তবতা দেখাক।

এই হত্যাকাণ্ড কেবল আল-জাজিরা পরিবারের ক্ষতি নয়, এটি গোটা বিশ্ব সাংবাদিক সমাজের ক্ষতি। একজন সাংবাদিক নিহত মানে কেবল একটি প্রাণ হারানো নয়—এর মানে একটি চোখ নিভে যাওয়া, যা বিশ্বের কাছে সত্য দেখাতে পারত। একটি কণ্ঠ থেমে যাওয়া, যা ইতিহাসের আসল পৃষ্ঠা লিখতে পারতো।

আজ যখন গাজায় নিহত এই চারজনের কথা ভাবি, তখন মনে হয়—আমরা হয়তো সবাই ধীরে ধীরে এমন এক পৃথিবীর দিকে এগোচ্ছি, যেখানে সত্যের কণ্ঠস্বর চুপ করিয়ে দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। যুদ্ধক্ষেত্রে সাংবাদিকদের জন্য সুরক্ষিত অঞ্চল তৈরি, উন্নত সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ, এবং সাংবাদিক হত্যার দায়ীদের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচার—এগুলো এখন আর বিলম্ব করার মতো বিষয় নয়।

গাজায় নিহত আনাস, মোহাম্মদ, ইব্রাহিম, নুফাল—তোমরা চলে গেলে, কিন্তু তোমাদের লেখা, তোমাদের তোলা ছবি, তোমাদের দেখা বাস্তবতা—এসব চিরকাল বেঁচে থাকবে। তোমাদের মৃত্যু আমাদের কাঁদিয়েছে, কিন্তু তোমাদের এই মৃত্যু আমাদের সাংবাদিকদেরকে সত্য প্রচার হতে বিরত রাখতে পারবে না। পৃথিবীতে যতদিন একজন সাংবাদিক বেঁচে আছেন, ততদিন সত্য মুছে যাবে না।

আমি বিশ্বাস করি, একদিন এই পৃথিবী তোমাদের মতো সাংবাদিকদের ত্যাগের মূল্য দেবে। আর সেই দিনের অপেক্ষায় আমরা যারা বেঁচে আছি, আমরা কলম, ক্যামেরা আর মাইক্রোফোন হাতে আবার মাঠে নামব—যত ঝুঁকিই থাকুক না কেন। কারণ আমাদের পেশার শপথই হলো—সত্য বলতে হবে, যে কোনো মূল্যে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
Facebook আমাদের Facebook পেজ

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সর্বসত্ব সংরক্ষিত © দৈনিক জনতার কন্ঠ-২৪/২০২৫ আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার আইনত অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট