1. dailyjonotarkontho01@gmail.com : দৈনিক জনতার কন্ঠ : দৈনিক জনতার কন্ঠ
  2. dailyjonotarkonthonewseditor@gmail.com : Mr Masud Rana : Mr Masud Rana
  3. live@www.dailyjonotarkontho.com : দৈনিক জনতার কন্ঠ : দৈনিক জনতার কন্ঠ
  4. info@www.dailyjonotarkontho.com : দৈনিক জনতার কন্ঠ :
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ :
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে কুচকাওয়াজ গলাচিপায় বিজয় দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ। সাতক্ষীরায় জামায়াতের যুব বিভাগের বিজয় র‌্যালি অনুষ্ঠিত মহিমাগঞ্জে তাফসীরুল কুরআন ও ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত, প্রধান অতিথি শামীম কায়সার লিংকন মহান বিজয় দিবস আজ: রক্তস্নাত সংগ্রামের গৌরবময় ১৬ই ডিসেম্ব।র কাশিমপুরে নারী শ্রমিকের মোবাইল ছিনতাই ও ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ কুমারগাড়ীতে তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে মোহাম্মদ শামীম কায়সার লিংকনের বক্তব্য বেউরগ্রামে ইসলামী জলসায় মোহাম্মদ শামীম কায়সার লিংকনের বক্তব্য চিয়ারগাঁওয়ে জামে মসজিদ উন্নয়ন উপলক্ষে ওয়াজ মাহফিল ও তিনতলা মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন। শিবপুর–মালঞ্চা পুরাতন জামে মসজিদের উন্নয়নে ইসলামী জলসায় প্রধান অতিথি শামীম কায়সার লিংকন।
আমাদের Facebook পেজ

নায়ক রাজ্জাক: আজ এক কিংবদন্তিকে হারানোর দিন

আফসার রেজা, জনতার কন্ঠঃ-
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট, ২০২৫
  • ৭৭ বার পড়া হয়েছে

আফসার রেজা, জনতার কন্ঠঃ-

১৯৪২ সালের ১ সেপ্টেম্বর, কলকাতার এক সাধারণ পরিবারের ঘরে জন্ম নেন নায়ক রাজ রাজ্জাক। ছোটবেলা থেকেই তার চোখে অন্যরকম উজ্জ্বলতা ছিল। বইয়ের পাতা উল্টানো আর গল্পের জগতে হারিয়ে যাওয়া—এ ছিল তার শৈশব। কিন্তু কেউ কি জানত, সেই ছেলেটিই পরবর্তীতে হয়ে উঠবেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক অবিস্মরণীয় নক্ষত্র?

নায়ক রাজ্জাকের চলচ্চিত্র যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৬ সালে ১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন চলচ্চিত্রে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। সে সময় অনেকের চোখে তিনি ছিলেন কেবল এক নবীন মুখ। কিন্তু তার চোখের গভীরতা, কণ্ঠের সুর, এবং অনুভূতির খেলায় দর্শকরা বুঝতে পেরেছিলেন—নায়ক রাজ্জাক সহজ নায়ক নন। তিনি ছিলেন একজন শিল্পী, যিনি নিজের চরিত্রকে পুরোপুরি বাঁচাতে জানতেন। তিনি জহির রায়হানের “বেহুলা” চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন।

নায়ক রাজ্জাক চলচ্চিত্র জগতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেন। “আগুন নিয়ে খেলা”, “এতটুকু আশা”, ” নীল আকাশের নীচে”, “জীবন থেকে নেয়া”, ” ওরা ১১ জন”, “অবুঝ মন”, “রংবাজ”, ” আলোর মিছিল”, “অশিক্ষিত”, “ছুটির ঘন্টা”, “বড় ভালো লোক ছিলো” সহ মোট ৩০০ টি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এই সব চলচ্চিত্রে তিনি দেখিয়েছেন কেবল অভিনয় নয়, মানবিক অনুভূতির জাদু। দর্শকরা আজও তার চরিত্রের চোখের গভীরতা, দৃষ্টির স্পন্দন মনে রাখতে পারেন। তিনি প্রেমিক, সংগ্রামী, বাবা, ভাই—সব চরিত্রেই নিজের প্রাণ ঢেলে দিতেন।

নায়ক রাজ্জাকের অভিনয় কৌশল ছিল অনন্য। কখনও কাঁদানো, কখনও হাসানো—তিনি দর্শকের হৃদয়ে সরাসরি প্রভাব ফেলতেন। তার ক্যারিয়ারের এক বিশেষ মুহূর্ত ছিল ১৯৭০-এর দশকে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলা চলচ্চিত্র যেন নতুন জীবন পায়। নায়ক রাজ্জাক সেই সময়ে নতুন প্রজন্মের জন্য এক মডেল হয়ে ওঠেন। তিনি দেখালেন কেবল নায়ক হওয়া নয়, চরিত্রের সঙ্গে মিশে যাওয়াও একটি শিল্প।

রাজ্জাকের প্রভাব কেবল বড় পর্দায় সীমাবদ্ধ ছিল না। নায়ক রাজ রাজ্জাক ছিলেন একজন সংস্কৃতি প্রেমী, সমাজসেবী, এবং নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের প্রেরণার উৎস। অনেক তরুণ অভিনেতা তার কাছে এসেছেন পরামর্শ নিতে, এবং রাজ্জাক কখনও বিরক্ত হননি। তিনি বলতেন, “চলচ্চিত্র শুধু অভিনয় নয়, এটি মানুষের অনুভূতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করার মাধ্যম।” এই বাক্যটি তাঁর জীবনের দর্শনের প্রতিফলন।

নায়ক রাজ্জাকের জীবন ছিল রঙিন, কিন্তু সরল। তিনি গাড়ি, বিলাসিতা বা দামী জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসতেন শিল্পকে। সিনেমার সেটে তিনি ছিলেন পেশাদার, বন্ধুর মতো মিশনশীল, এবং ভক্তদের কাছে একজন দয়ালু নায়ক। তিনি প্রতিটি দৃশ্যে নিজের হৃদয় ঢেলে দিতেন। এমনকি ছোট চরিত্রেও রাজ্জাক দর্শকের মন ছুঁয়ে যেতেন।

চলচ্চিত্রের ইতিহাসে নায়ক রাজ্জাকের অবদান অনন্য। শুধু অভিনয় নয়, তিনি চিত্রনাট্য, পরিচালনা এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রেও একাধিকবার কাজ করেছেন। তার কাজের মধ্যে দেখা যায় গভীর মানবিক দিক, সমাজের বাস্তবতা, প্রেম ও বন্ধুত্বের জটিলতা। রাজ্জাক ছিলেন এক অনন্য শিল্পী, যিনি সিনেমার প্রতিটি ফ্রেমে হৃদয় ছড়িয়ে দিতে জানতেন।

তার ব্যক্তিগত জীবনও দর্শকদের কাছে রোমাঞ্চকর ও অনুপ্রেরণীয় ছিল। সংসার, পরিবার, বন্ধুত্ব—সব ক্ষেত্রে নায়ক রাজ রাজ্জাক ছিলেন আন্তরিক। তার সঙ্গে কাজ করা মানুষরা তাকে মনে রাখেন দয়ালু, ধৈর্যশীল এবং মানবিকতার প্রতীক হিসেবে। ভক্তরা তাকে কেবল নায়ক মনে করেননি, তিনি তাদের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত অনুভূতির প্রতিচ্ছবি ছিলেন।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও নায়ক রাজ্জাক ছিলেন দেশের প্রতি গভীর অনুরক্ত। তিনি কখনও সরাসরি সামরিক কাজে না গেলেও, তার চলচ্চিত্র এবং ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডে দেশের স্বাধিকার ও মানবিকতার জন্য বার্তা প্রচার করতেন। সেই সময়ে তার কিছু সিনেমা ছিল দেশের মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।

নায়ক রাজ্জাকের ক্যারিয়ারকাল দীর্ঘ, প্রায় পাঁচ দশক। এই সময়ে তিনি ৩০০-এর বেশি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। তার অভিনয় শুধু দর্শককেই মুগ্ধ করেনি, চলচ্চিত্র নির্মাতা, সমালোচক এবং সহকর্মী সকলের কাছেই তিনি ছিলেন অনন্য। রাজ্জাক এক নক্ষত্র, যার আলো কখনও ফিকে হবে না।

কিন্তু ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে এক অমোঘ ক্ষতি ঘটে। সেদিন নায়ক রাজ্জাক আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নেন। তবে তার স্মৃতি, তার অভিনয়, তার অনুপ্রেরণা, চিরকাল বেঁচে থাকবে।

আজও, যখন আমরা নায়ক রাজ্জাককে স্মরণ করি, শুধু নায়ককে নয়, বরং সেই মানুষটিকে মনে করি, যিনি সিনেমার মাধ্যমে আমাদের হৃদয়ে প্রবেশ করেছিলেন। আমরা ভাবি, তার চোখের গভীরতা, তার হাসির কোমলতা, তার দৃঢ় ব্যক্তিত্ব—সবই যেন আমাদের মনে অমর হয়ে আছে।

নায়ক রাজ রাজ্জাকের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা শুধু শোক প্রকাশ করি না, বরং তার জীবনকে উদযাপন করি। তার অভিনয় আমাদের শেখায়, কিভাবে প্রেম, বেদনা, সংগ্রাম এবং মানবিকতা পর্দায় জীবন্ত করা যায়। তিনি আমাদের মনে করিয়ে দেন, সত্যিকারের শিল্পী কখনও হারায় না, তিনি চিরকাল বেঁচে থাকেন আমাদের হৃদয়ে, আমাদের স্মৃতিতে, আমাদের সংস্কৃতিতে।

নায়ক রাজ রাজ্জাকের অবদান চিরকাল বাংলার চলচ্চিত্রের ইতিহাসে আলো হয়ে থাকবে। ২১ আগস্ট তারিখে আমরা তার বিদায়কে স্মরণ করি, আর তার জীবনের গল্পকে মনে রেখে বলি—”তুমি নেই, কিন্তু তুমি চিরকাল বেঁচে আছো আমাদের হৃদয়ে।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
Facebook আমাদের Facebook পেজ

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সর্বসত্ব সংরক্ষিত © দৈনিক জনতার কন্ঠ-২৪/২০২৫ আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার আইনত অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট