স্টাফ রিপোর্টার, পার্বত্যাঞ্চল:
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে রাঙামাটিতে টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। হ্রদের পানি বিপদসীমায় পৌঁছায় কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
পানি বৃদ্ধির কারণে হ্রদ সংলগ্ন নতুন নতুন বাড়িঘর ও কৃষিজমি প্লাবিত হচ্ছে। রাঙামাটি শহরের আশপাশের এলাকা ছাড়াও বাঘাইছড়ি, লংগদু ও জুরাইছড়ির বেশ কিছু অঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। বাঘাইছড়ির কিছু এলাকায় পানি নামতে শুরু করলেও নিচু এলাকায় এখনো জলাবদ্ধতা রয়ে গেছে।
কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদের পানি উচ্চতা ১০৮.৩৫ এমএসএল-এ দাঁড়িয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী এ সময়ে পানির স্তর থাকার কথা ৯০ এমএসএল, অর্থাৎ ১৮ এমএসএল বেশি পানি রয়েছে। এর ফলে হ্রদ তীরবর্তী এলাকার আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক আজিজ জানান, পানির তোড়ে তার জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। অন্যদিকে শহরের শান্তিনগর, পুলিশ লাইন, পৌরকলোনি ও ঝুল্লিকা পাহাড় এলাকার ঘরবাড়িও প্লাবিত হয়েছে।
কাপ্তাই বাঁধ কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ৪ আগস্ট দিবাগত রাতে জরুরি ভিত্তিতে প্রথমে ১৬টি জলকপাট আংশিক খুলে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৯ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে পানির উচ্চতা ১০৮.৫৫ এমএসএল অতিক্রম করলে আরও পানি স্পিলওয়ে দিয়ে ছাড়তে হয়। এর পর কয়েকদিন জলকপাট বন্ধ থাকলেও বুধবার (২০ আগস্ট) রাত থেকে আবারও জলকপাট খোলা হয়েছে, যা শুক্রবারও অব্যাহত রয়েছে। বাঁধের পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ এমএসএল হওয়ায় পরিস্থিতি ক্রমেই সংকটজনক হয়ে উঠছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানায়, বর্তমানে হ্রদের পানি বৃদ্ধির কারণে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ২২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। পাঁচটি ইউনিটই পুরোপুরি সচল রয়েছে এবং এর মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৩২ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে ছাড়া হচ্ছে। সর্বমোট এখন ৪১ হাজার কিউসেক পানি কাপ্তাই হ্রদ থেকে নদীতে নিষ্কাশন করা হচ্ছে।