1. dailyjonotarkontho01@gmail.com : দৈনিক জনতার কন্ঠ : দৈনিক জনতার কন্ঠ
  2. dailyjonotarkonthonewseditor@gmail.com : Mr Masud Rana : Mr Masud Rana
  3. live@www.dailyjonotarkontho.com : দৈনিক জনতার কন্ঠ : দৈনিক জনতার কন্ঠ
  4. info@www.dailyjonotarkontho.com : দৈনিক জনতার কন্ঠ :
রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ :
সৌদি আরব সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা গোবিন্দগঞ্জে দ্রুতগামী মোটরসাইকেলের ধাক্কায় টপ- ব্রেলিয়ান্ট কেজি স্কুলের শিক্ষার্থী আশংকাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ফরিদগঞ্জে বিএনপির গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি শাহানশাহী উচ্চ বিদ্যালয়ে ছায়ানীড়ের ভাষা কর্মশালা ও ব্যারিস্টার গোলাম নবী মুক্ত পাঠাগার উদ্বোধন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে যুবদলের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত মিডিয়াকর্মি স্বর্ণময়ীর আত্মহত্যায় প্ররোচানাকারীর শাস্তির দাবীতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ১৪ বছর বয়সী এক মাদ্রাসাছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ| গোবিন্দগঞ্জের কাটাবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিলে সভাপতি পদে শফিকুল ও সাধারণ সম্পাদক লাবলু,সাংগঠনিক দুদু নির্বাচিত ঠাকুরগাঁও হরিপুরে মির্জা রুহল আমিন গোল্ডকাপ ফুটবল টুনামেন্টের ফাইনাল খেলা সর্ম্পণ হয়েছে| পিআর আমি নিজেই বুঝিনা,জনগণ বুঝবে কি ? ইস্যু তৈরী করে, নির্বাচন পন্ড করে বিভেদ তৈরী করার চেষ্টা চলছে

জিয়াউর রহমান: সেনাপ্রধান থেকে সফল রাষ্ট্রনায়ক

জাহাঙ্গীর আলম স্টাফ রিপোর্টারঃ-
  • প্রকাশিত: সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫
  • ৫২ বার পড়া হয়েছে

জাহাঙ্গীর আলম স্টাফ রিপোর্টারঃ-

“১৯৭৫ সালের ২৫ আগস্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের চিফ অব আর্মি স্টাফ হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন।”
এই দিনটি ছিল একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। স্বাধীনতার মাত্র কয়েক বছর পর, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে একটি দেশের সামরিক নেতৃত্ব নেওয়ার ভার তার কাঁধে এসে পড়ল। তবে জিয়াউর রহমানের গল্প শুরু হয়েছিল অনেক আগেই।

১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার ছোট্ট শহরে জন্ম নেন জিয়াউর রহমান। তার পিতা ম্যানসুর রহমান ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা, যিনি সততার সঙ্গে কাজ করতেন এবং সংসারে ন্যায়পরায়ণতার পরিবেশ বজায় রাখতেন। ছোটবেলা থেকেই জিয়ার মধ্যে লক্ষ্য করা যেত দৃঢ়তা, ধৈর্য এবং নেতৃত্বের গুণ। স্কুলে পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ ছিল অনেক বেশি। খেলাধুলা, শৃঙ্খলা, অধ্যবসায়—এই তিনের সমন্বয় তার চরিত্রে একটি অদম্য শক্তি যোগ করেছিল।

১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে যোগদান করেন এবং ১৯৫৫ সালে অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন। তরুণ এই অফিসার পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে নিজের সাহস, কৌশল এবং শৃঙ্খলা প্রদর্শন করেন। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় তিনি সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে Sitara-e-Juraat খেতাব অর্জন করেন। যুদ্ধক্ষেত্রে তার নেতৃত্ব এবং দক্ষতা তাকে শুধু সেনা নয়, বরং একজন স্বাভাবিক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তার নাম ইতিহাসে চিরস্থায়ী হয়ে ওঠে। ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনারা চট্টগ্রামে নিরস্ত্র মানুষ হত্যার সময় মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। এর ফলে দেশের মানুষ অনুপ্রাণিত হয়, মুক্তিযোদ্ধারা সংগঠিত হয় এবং মুক্তিযুদ্ধের যাত্রা আরও জোরদার হয়। পরে তিনি নেতৃত্ব দেন Z-Force-এর, যা মুক্তিযুদ্ধে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। স্বাধীনতার পর তিনি পান বীর উত্তম খেতাব, যা তার বীরত্বের স্বীকৃতি।

মুক্তিযুদ্ধের পর সেনাবাহিনীকে পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে তিনি কঠোর, তবে ন্যায়পরায়ণ নেতৃত্ব প্রদান করেন। তার দৃঢ় এবং চিন্তাশীল নেতৃত্বের জন্য ১৯৭৫ সালের ২৫ আগস্ট তাকে চিফ অব আর্মি স্টাফ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তখন অত্যন্ত অস্থির। অভ্যন্তরীণ উত্তেজনা এবং রাজনৈতিক শৃঙ্খলা রক্ষা করার চ্যালেঞ্জ তাকে সরাসরি নেয়।

সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর জিয়াউর রহমান বুঝতে পারলেন, সেনাবাহিনী শুধু অস্ত্রধারী বাহিনী হিসেবে সীমাবদ্ধ থাকবে না। তাদেরকে দেশের উন্নয়নের অংশীদার হতে হবে। তাই তিনি শুরু করেন নতুন ধরণের নেতৃত্ব। তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন, শক্তি কেবল যুদ্ধের জন্য নয়, দেশের সার্বিক কল্যাণে ব্যবহৃত হওয়া উচিত।

১৯৭৭ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি হন। এই পদ গ্রহণের পর তার মূল লক্ষ্য ছিল দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং জনগণের জীবনমান উন্নত করা। তিনি ঘোষণা করেন ১৯ দফা কর্মসূচি, যার মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, অর্থনীতির পুনর্গঠন, প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণ এবং গ্রামীণ উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

কৃষি ক্ষেত্রে তার অবদান যুগান্তকারী। সার, নলকূপ, আধুনিক কৃষিযন্ত্র সরবরাহ করা হয়। কৃষি গবেষণাকে উৎসাহ দেওয়া হয়, যাতে নতুন প্রযুক্তি দ্রুত গ্রামে পৌঁছায়। কৃষকদের জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা হয়। ১৯৭৮ সালে প্রায় এক বিলিয়ন টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করা হয়। শস্যগুদাম ঋণ কর্মসূচি চালু হয়। কৃষকরা স্বাবলম্বী হয়, উৎপাদন বাড়ে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আসে। এই কারণে তাকে অনেক ইতিহাসবিদ “সবুজ বিপ্লবের স্থপতি” হিসেবে উল্লেখ করেন।

গ্রামীণ উন্নয়নের ক্ষেত্রেও তিনি নতুন পথ দেখান। তিনি গ্রাম সরকার (Village Council) এবং Village Defence Party (VDP) চালু করেন। এর মাধ্যমে গ্রামীণ মানুষ স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তায় সরাসরি অংশ নেয়। তারা গ্রামের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিজস্ব ভূমিকা পালন করে। এই উদ্যোগের ফলে গ্রামীণ জনগণ আত্মবিশ্বাসী হয়, সমাজ ও রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে তাদের মূল্যায়ন বাড়ে।

শিল্পোন্নয়নেও তার প্রভাব ছিল বিশাল।

তার সময়েই গার্মেন্টস শিল্পের বীজ রোপণ করা হয়। Daewoo ও Desh Garments যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের সূচনা হয়। যা পরবর্তীতে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি বেসরকারি খাতকে উৎসাহ দেন, শিল্পোন্নয়নে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টি করেন, এবং দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য বাজারমুখী নীতি গ্রহণ করেন।

পররাষ্ট্রনীতি ছিল বহুমুখী। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে দেশ মূলত ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নের উপর নির্ভরশীল ছিল। জিয়াউর রহমান বহুমুখী কূটনীতি গ্রহণ করেন। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, পাকিস্তান, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেন। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বৃদ্ধি পায় এবং বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়। ভারতের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ফারাক্কা পানি বণ্টন চুক্তি সম্পন্ন করেন। দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রস্তাব দেন, যা পরে SAARC-এ রূপান্তরিত হয়।

শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে গুরুত্ব দেন। যুবকদের প্রযুক্তি, বিজ্ঞান ও কৃষি শিক্ষায় উৎসাহিত করেন। সেনাবাহিনী এবং গ্রামীণ যুবকদের প্রশিক্ষণ ও নেতৃত্ব গঠনের মাধ্যমে দেশের সামরিক ও সামাজিক কাঠামো শক্তিশালী করেন।

জিয়াউর রহমান কেবল অর্থনীতি, শিল্প ও প্রশাসনে নয়, রাজনৈতিক সংস্কারেও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলেছেন। ১৯৭৮ সালে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (BNP) গঠন করেন। দলের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংস্কার, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হয়। ১৯৭৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন, যা প্রমাণ করে জনগণ তার উন্নয়নমুখী নীতি ও নেতৃত্বকে সমর্থন করেছে।

তার কর্মকাণ্ডের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব আজও দেশে দৃশ্যমান। গার্মেন্টস শিল্পের উত্থান, কৃষিতে স্বনির্ভরতা, গ্রামীণ ক্ষমতায়ন, বিকেন্দ্রীকৃত প্রশাসন—all কিছুই তার নেতৃত্বের ফল। মুক্তিযুদ্ধের বীর, সেনাপ্রধান এবং রাষ্ট্রপ্রধান—জিয়াউর রহমান প্রমাণ করেছেন যে একজন নেতা কেবল ক্ষমতার জন্য নয়, দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য নিবেদিত থাকতে পারে।

তার জীবনকাহিনী আমাদের শেখায়—দৃঢ় বিশ্বাস, পরিকল্পনা এবং জাতির জন্য নিবেদিত মন—এই তিনটির সমন্বয়ই সত্যিকারের নেতৃত্বের চাবিকাঠি। তার নীতি, কর্মসূচি এবং দর্শন বাংলাদেশের সামরিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলেছে। প্রতিটি গ্রাম, শহর এবং রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে আজও তার নেতৃত্বের ছাপ স্পষ্ট।

জিয়াউর রহমানের জীবন কেবল ইতিহাসের পাতায় নয়, সমগ্র জাতির মনে এবং দেশের উন্নয়নের পথে চিরস্থায়ী প্রভাব রেখেছে। তিনি প্রমাণ করেছেন যে সত্যিকারের নেতা সেই নয়, যিনি শুধু ক্ষমতার শীর্ষে থাকে, বরং সেই নেতা হয় যে দেশের মানুষের জীবনমান, সম্ভাবনা এবং ভবিষ্যতের জন্য কাজ করে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সর্বসত্ব সংরক্ষিত © দৈনিক জনতার কন্ঠ-২০২৪/২০২৫ আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার আইনত অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট