
খায়রুল ইসলাম | স্টাফ রিপোর্টার |
কুমিল্লার দেবিদ্বারে বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামে সালিসের সংবাদ সংগ্রহের সময় আট সাংবাদিক উপর হামলাকারীরা সাংবাদিকদের ওপর নির্মমভাবে হামলা চালিয়ে তাদের মোবাইল ফোন, ক্যামেরা এবং নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। কয়েকজন সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়ে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া সাংবাদিক সোহরাব হোসেনের মা–বাবা ও ছোট বোনও আহত হয়েছেন।
আহত সাংবাদিকরা হলেন: দৈনিক দিনকালের প্রতিনিধি পারভেজ সরকার, এশিয়ান টিভির নেছার উদ্দিন, দৈনিক আজকের কুমিল্লার প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন, দৈনিক ডাক প্রতিদিনের মো. আনোয়ার হোসেন, দৈনিক আমার দেশের আবু বক্কর ছিদ্দিক, দৈনিক কালবেলার জহিরুল ইসলাম মারুফ, দৈনিক ভোরের দর্পণের মো. শাহজালাল এবং এটিএন (এমসিএল) নিউজের সাইফুল ইসলাম সজিব। স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে দুই পরিবারের বিরোধের জের ধরে সালিসকে কেন্দ্র করে সাংবাদিকদের ওপর এই হামলা পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়েছে।
সাংবাদিকদের ওপর এই বর্বরোচিত হামলা কেবল গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর নয়, জনগণের জানার অধিকার এবং দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপরও সরাসরি আঘাত। সাংবাদিকরা জনগণের কণ্ঠস্বর এবং জাতির বিবেক। তাদের ওপর হামলা মানে সত্যকে দমন করা এবং জনসাধারণকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়ার ঘৃণ্য প্রচেষ্টা।
সাংবাদিকরা জাতির বিবেক এবং জনতার কণ্ঠস্বর। তারা দেশের সত্যি, জনগণের সমস্যা, দুঃখ-কষ্ট এবং সমাজের বাস্তবতা জনগণের সামনে তুলে ধরেন। তাদের ওপর হামলা মানে শুধু একজন সাংবাদিককে নয়, গোটা জাতিকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া। এটি গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি সরাসরি আঘাত। আমরা রাষ্ট্র ও প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি— যাতে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক হামলায় জড়িত দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয় এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হয়। সাংবাদিকরা নিরাপদ থাকলে জাতি সঠিক তথ্য জানার অধিকার নিশ্চিত করতে পারবে এবং সত্যের প্রতি জনগণের আস্থা অটুট থাকবে। আমাদের দাবি, এ ধরনের বর্বরোচিত হামলার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধে রাষ্ট্র ও প্রশাসনের তৎপর পদক্ষেপ অপরিহার্য।”
“এই হামলার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে ক্ষুব্ধ, মর্মাহত এবং ক্ষোভে ফুঁসছি। সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটি শুধু এক সাংবাদিকের প্রতি আক্রমণ নয়, বরং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, জনসাধারণের তথ্য গ্রহণের অধিকার এবং দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর আঘাত। সাংবাদিকরা যখন জনগণের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে রক্তাক্ত হন, তখন তা গোটা জাতির জন্য কলঙ্কজনক।
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব এবং প্রশাসনের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা রাষ্ট্রের কার্যকর পদক্ষেপের প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখি এবং জোর দাবি জানাচ্ছি— হামলার সঙ্গে জড়িত সকল দোষীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, গণমাধ্যমের স্বাধীন পরিবেশ এবং পেশাগত দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক। আমরা স্পষ্ট করে জানাই—
১. হামলার সঙ্গে জড়িত সকল আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
২. দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৩. সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীন পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে