
হাসমত (হাসু) স্টাফ রিপোর্টারঃ-
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মাজুখান এলাকায় এক অদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নিয়মিত খাজনা পরিশোধ এবং নামজারী সম্পন্ন থাকা সত্ত্বেও নিজস্ব সম্পত্তিতে প্রবেশ করতে পারছেন না মো. আলম নামে এক ব্যক্তি। স্থানীয় প্রভাবশালী দখলবাজ চক্রের কারণে তিনি ও তার পরিবার চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
ভুক্তভোগী মো. আলমের ভাই মো. সজিব জানান, মাজুখান মৌজার এসএ-৩৫২ এবং আরএস-৪২৫ দাগে রেকর্ডভুক্ত তাদের ১৫ শতাংশ জমি সরকারি রাস্তার সঙ্গে লাগানো। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী আমিনুদ্দিন (পিতা: সবদুল), কালাম (পিতা: সবদুল) ও তাদের ভাতিজা সজিব (পিতা: মৃত সালাম) গং রাস্তার সংলগ্ন অংশ অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। তারা জোরপূর্বক গাছের চারা রোপণ করে ও বাঁশের বেড়া দিয়ে জায়গা আটকে রাখায় জমির মালিক পরিবার নিজ সম্পত্তিতে প্রবেশ করতে পারছে না।
সজিব অভিযোগ করেন, “প্রভাবশালী হওয়ায় তারা গ্রাম্য সালিস, স্থানীয় গণ্যমান্য কিংবা আইন-আদালতের নির্দেশ কিছুই মানে না।” স্থানীয়ভাবে বহুবার অভিযোগ জানানো হলেও আমিনুদ্দিন গংয়ের ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে কথা বলতে সাহস পাননি।
নিজেদের অধিকার রক্ষায় ২০২৫ সালে কালিয়াকৈর থানায় অভিযোগ দায়ের করলে গত ৩১ অক্টোবর থানার এসআই তাদের পক্ষে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিপক্ষ পুনরায় জায়গা দখলের পাঁয়তারা শুরু করে।
অভিযোগে সজিব উল্লেখ করেন, সম্প্রতি প্রতিপক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলার চেষ্টা চালায় এবং বাধা দিতে গেলে হত্যার হুমকি দিয়ে সরে যায়। স্থানীয়রা উপস্থিত হওয়ায় প্রাণে রক্ষা পেলেও পরে তাকে লাশ গুমের হুমকি দেওয়া হয়।
এছাড়া সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে সত্য প্রকাশ করায় প্রতিপক্ষ তার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং নানা সময়ে ভূয়া মামলার ভয় দেখায়। ২০২৩ সালে চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় মাজুখান বাজারে প্রকাশ্যে মারধর করে হত্যাচেষ্টা চালায় একই চক্র। সে সময় মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে মুচলেকা দিয়ে বিষয়টি আপাতত মীমাংসা করা হলেও প্রতিপক্ষ আবারও আগের মতো কর্মকাণ্ড শুরু করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, আমিনুদ্দিন গংয়ের বিরুদ্ধে জমি দখল, চাঁদাবাজি, সরকারি জমি বিক্রি সহ একাধিক অভিযোগ থাকলেও তাদের ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে কথা বলে না। মামলা-হামলার ভয়ে সবাই মুখ বন্ধ রাখে।
নিজেদের সম্পত্তি রক্ষায় একদিকে প্রশাসন, অন্যদিকে সংবাদকর্মীদের কাছে সাহায্য চাওয়ায় প্রতিপক্ষের হুমকি আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ করেন সজিব। তিনি জানান—
“আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রতিনিয়ত নানা হুমকি পাচ্ছি। আইনের শাসন ও প্রশাসনের সহযোগিতা না পেলে হয়তো আমাদের জমি চিরতরে হারাতে হবে।”