জেলা ব্যুরো প্রধান, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ, শরীরচর্চা ও ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় বাংলাদেশ-তুরস্ক ফ্রেন্ডশীপ স্কুল মাঠে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জিল্লুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, সেনাবাহিনী ক্যাম্প প্রধান, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেজর বাহাউদ্দীন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ বাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ, শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসটির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। পরে প্রধান ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভসূচনা করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ও লাল-সবুজের পতাকা। তাদের আত্মত্যাগের কথা কখনোই ভুলে গেলে চলবে না। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে, দেশপ্রেম ও মানবিক মূল্যবোধে গড়ে তুলতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “মুক্তিযোদ্ধারা শুধু একটি যুদ্ধ জয়ের নায়ক নন, তারা আমাদের চেতনার বাতিঘর। রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে তাদের যথাযথ সম্মান নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জিল্লুর রহমান বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়তে পুলিশ বাহিনী সর্বদা জনগণের পাশে রয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আদর্শ আমাদের প্রতিদিনের কাজের অনুপ্রেরণা।”
মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, “স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও আমরা চাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অক্ষুণ্ন থাকুক। তরুণ প্রজন্ম যেন দেশ ও জাতির জন্য কাজ করে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
বক্তব্য পর্ব শেষে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ মাঠ পরিদর্শন করেন। এরপর পুলিশ বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করে অতিথিদের সালাম প্রদর্শন করেন। পরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মনোমুগ্ধকর শরীরচর্চা ও ডিসপ্লে প্রদর্শন করে দর্শকদের মুগ্ধ করে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল ও ক্রেস্ট প্রদান করে গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানো হয়। পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে ঢাক ও সানাইয়ের তালে তালে শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা উপস্থিত সকলকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে তোলে।