স্টাফ রিপোর্টার, হাসমত : ট্রাফিক বিভাগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বক্তব্যে অস্পষ্টতা

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকায় মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিং করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। কভার্ডভ্যান ও ট্রাক পার্কিংয়ের কারণে প্রতিদিনই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে, যার ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ পথচারী, কর্মজীবী মানুষ ও যাত্রীসাধারণ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কোনাবাড়ি সড়কের গুরুত্বপূর্ণ অংশে সারিবদ্ধভাবে ভারী যানবাহন পার্কিং করে রাখা হয়েছে। কোনাবাড়ি জেলখানা রোডের মাথায় ফ্লাইওভারের নিচে রাখা হয়েছে শত শত ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান। সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় নির্মিত রাস্তার আয়ারল্যান্ড ভেঙে এসব ট্রাক রাখা হচ্ছে উড়াল ফ্লাইওভারের নিচে, দেখার মত যেন কেউ নেই। একদিকে অবৈধ পার্কিং যাত্রীদের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা থ্রি হুইলার ও ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা এতে করে সড়কের কার্যকর প্রশস্ততা কমে গিয়ে যান চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়ে। অথচ ঘটনাস্থলে ট্রাফিক পুলিশ উপস্থিত থাকলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না—এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এস এম আশরাফুল আলম, পিপিএম-সেবা–এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,
“এই বিষয় নিয়ে আমার কাছে কেন এসেছেন? এ বিষয়ে আমার  কাছে আসতে হয় ? ওই এলাকার যে টিআই আছেন, তাকে আমি বলে দেব। এ বিষয়ে আপনাকে কোনো বক্তব্য দেব না। আপনি নিউজ করেন।”
কথোপকথনের সময় তিনি কিছুটা রাগান্বিত ছিলেন, দুপুর একটার পর অফিসে ঢুকেন ইউনিফর্ম ছাড়াই। তবে কি তিনি ইউনিফর্ম ছাড়াই অফিস করেন ? তবে এই রাগান্বিত হওয়ার কারণ সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, কোনাবাড়ি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী চক্র মহাসড়কের জায়গা দখল করে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান পার্কিং করে রাখছে। এতে করে নিয়মিত যানজট সৃষ্টি হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যত নীরব ভূমিকা পালন করছে।
একজন পথচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“আমাদের ধারণা, বড় কোনো শক্তিশালী পক্ষ জড়িত বলেই এখানে ট্রাফিক পুলিশ কার্যকর ব্যবস্থা নেয় না। প্রতি মাসে মাসোয়ারার বিনিময়ে এখানে গাড়ি রাখা হয়—এমন কথাও এলাকায় শোনা যায়।”
সুশীল সমাজের প্রশ্ন
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, মহাসড়ক দখল করে অবৈধ পার্কিং একটি গুরুতর অপরাধ। এতে শুধু যানজট নয়, দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে। তারা প্রশ্ন তুলেছেন—
যদি ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বশীলরা এ বিষয়ে কঠোর না হন, তাহলে অবৈধ দখল কীভাবে বন্ধ হবে?
অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত হবে কবে?
অবৈধ পার্কিংয়ের পেছনে কারা জড়িত, তা প্রকাশ্যে আনা হবে কি না?
প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ
সচেতন মহল মনে করছেন, বিষয়টি দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনে স্বচ্ছ তদন্ত ও দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। অন্যথায়, কোনাবাড়ি এলাকার মহাসড়কে যানজট ও জনদুর্ভোগ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।